শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন

আপডেট
ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজের দোকান বরাদ্দের কোটি টাকা হরিলুট

ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজের দোকান বরাদ্দের কোটি টাকা হরিলুট

ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজের দোকান বরাদ্দের কোটি টাকা হরিলুট

রেজাউল করিম রেজা, ময়মনসিংহ : ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজ মার্কেট বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির মূলে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা, স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি ও মার্কেট কমিটির আহবায়ক প্রভাষক আজিজুর রহমান এবং একাডেমিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার। তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি। তাদের আধিপত্য বিস্তার দীর্ঘদিনের। অভিযোগ আছে, কলেজ মার্কেট এর দোকান বরাদ্দের দূর্নীতি, ভাড়াটিয়া পক্ষের সাথে চুক্তি না করে মৌখিকভাবে ভাড়া উত্তোলন করে আত্বসাত করা হয়।

মার্কেটে ভিট দোকানসহ প্রায় শতাধিক দোকানপাট রয়েছে। কলেজ মার্কেট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন প্রভাষক আজিজুর রহমান। মার্কেটের দোকান বরাদ্দের কোটি টাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও আজিজুর রহমান বিভিন্ন ভুয়া ভায়চারের মাধ্যমে আত্বসাত করেছেন। এবিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও মাউশিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার স্বারক নং- ০০০. ১০৩/৪৩-২০১৬ । দোকানপাট বরাদ্দ ও সাবলেট ভাড়া দিয়েছেন যার কোন টাকাই সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি। প্রভাষক আজিজুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত জয়নব রেখা সে ব্যক্তিভাবে লাভবান হওয়ায় মার্কেটের বকেয়া টাকা আদায় করছেন না। কলেজ মার্কেট এর বর্তমান বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে যা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা ছিলো।

কলেজ জাতীয়করণের পরিপত্র জারি হওয়ার পর কলেজ গেইটের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত অবৈধ দ্বিতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয় যা সম্পূর্ণ সরকারি নীতির পরিপন্থী। কলেজ সরকারিকরণের পরিদর্শনের পত্রে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও ব্যাংকে থাকা অর্থ উত্তোলন এর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও সরকারি আদেশ অমান্য করে কিভাবে ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এর তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। নিজেরা লাভবান হতে গোপনে ভাড়া তুলে নেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান অধ্যক্ষ(ভারপ্রাপ্ত) জয়নব রেখা বলেন, আমি সে সময় দায়িত্বে ছিলাম না। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলেজের অভ্যন্তরীণ ও পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি, ভর্তি কমিটি ও ফরম পূরণ কমিটি গঠন ও ভাতা বন্টনের ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালার অনুসরণ করা হয় না। স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমানের পছন্দের শিক্ষক ও কর্মচারিকে টানা একাধিকবার কমিটিতে রেখে বিভিন্নভাবে সরকারি অর্থের সুবিধা নিচ্ছেন। একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারি রয়েছেন যাদেরকে গত কয়েক বছর ধরে কোন কমিটিতেই রাখা হচ্ছে না।

 

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ত্রিশালের সরকারি নজরুল কলেজে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত নতুন ভবনে সরকারি বিদ্যুৎ ও পানি খরচ করে শুক্রবার ও শনিবারসহ পুরো সপ্তাহজুড়ে কলেজের ছাত্র/ছাত্রী ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং বাণিজ্য করে আসছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্টাফ কাউন্সিল এর সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান ও একাডেমিক কাউন্সিল এর আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে রসায়নের প্রভাষক মোঃ রকিবুল হাসান ও পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক এ.কে.এম. ইয়াহিয়া দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মকান্ড করে আসছে । কলেজটি জাতীয়করণের পরিদর্শনের পত্রে ব্যাংকে জমা টাকা উত্তোলন ও উন্নয়নমূলক কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষের কক্ষ সংলগ্ন টয়লেট,একটি কক্ষ ও ওযুখানা নির্মাণ করেছেন এবং কলেজের অভ্যন্তরীণ অডিট কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে স্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারি প্রভাষক আজিজুর রহমান ও একাডেমিক কমিটির আহবায়ক প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার তাদের সিন্ডিকেটকে অডিট কমিটিতে রাখেন এবং অডিট কার্য সম্পন্ন করেন। কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী শফিকুল ইসলাম (দুলাল) বিগত কয়েক বছর আগে বাসা থেকে কলেজে আসার পথে সরকারি কোষাগারের ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা হারানো হয়েছে মর্মে তৎকালীন অধ্যক্ষ মজিবুর রহমানকে মৌখিকভাবে জানান।

এ বিষয়ে কোন তদন্ত কমিটি হয়নি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়নি। ওই টাকা অদ্যাবধি সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কোনকিছু জানেন না বলে জানান। প্রভাষক আজিজুর রহমান জানান আমাকে দেড় বছর আগে মার্কেটের আহবায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর থেকেই মার্কেট থেকে ভাড়ার টাকা উত্তোলন করে কেরানির মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেই। আগে কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতো লোকাল অধিদপ্তর।

 সরকারী নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা জানান, বেশি বাড়বেন না। আমাকে তো চিনেন না । আমার স্বামী  আ,লীগ পন্থী সাবেক
সিভিল সার্জন ডাঃ মাহাবুবুর রহমান । তার সরাসরি যোগাযোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে । তিনি দুইবার আমার স্বামীকে সিভিল সার্জন বানিয়েছেন। আমাদের সাথে শেখ পরিবারের আগে থেকে ভাল সর্ম্পক। আমার ভাই ময়মনসিংহ জেলা আ,লীগের নেতা। আমি ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলাম।

 

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |